✍️ বাংলা চিত্রশিল্পে যামিনী রায়ের অবদান আলোচনা কর।
উঃ- উনিশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের মধ্যভাগে বাংলার আধুনিক চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায় এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। ১৮৮৭ সালের ১১ ই এপ্রিল বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন সৌখিন শিল্পী। অবসর-জীবন তিনি যে গ্রামে কাটান সেখানে বেশকিছু কুমোর পরিবারের বাস ছিল ,যা যামিনী রায়ের শিল্পীজীবন অন্বেষায় পরোক্ষ ভূমিকা নিয়েছিল। ১৯০৬-১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে ইউরোপীয় একাডেমিক রীতিতে চিত্র বিদ্যা শেখেন। আর্ট স্কুলে ইতালীয় চিত্রশিল্পী গিলার্দি ও পরে পার্সি ব্রাউনের সংস্পর্শে এসে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় শিল্পের
সাথে পরিচিত হন। এই সময় তিনি পেশাদার শিল্পী জীবনে প্রবেশ করেন ও পাশ্চাত্যের বিখ্যাত পোস্ট ইম্প্রেশনিস্ট শিল্পী সেজান, ভ্যান গগ, ও গগ্যাঁ -র অনুকরনে নিরীক্ষণ ধর্মী ছবি অঙ্কন করেন।১৯১৮-১৯১৯ থেকে তার ছবি ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ ফাইন আর্ট এর পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে।জীবনের প্রারম্ভে তিনি পাশ্চাত্য রীতি গ্রহণ করলেও শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় একাডেমিক রীতির আরম্ভর প্রিয়তা পরিহার করে গ্রাম বাংলার পল্লী প্রকৃতির নিসর্গ চিত্র ,আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকা এবং ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম কাহিনীনির্ভর পটচিত্র অঙ্কনে তিনি অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।১৯৩৪ সালে তার ছবি সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে। এছাড়া ১৯৫৫ সালে ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মভূষণ উপাধি লাভ করেন।
✍️ মহুয়ার দেশ কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর জানতে ক্লিক করো এখানে
বাংলা চিত্রকলায় যামিনী রায় একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে চিত্র অঙ্কন করতেন। তিনি চাইতেন তার ছবি যেন অন্য সকলের ছবির থেকে আলাদা হয়, সে ছবি ভালোই হোক কিংবা মন্দই হোক। যা পরবর্তীকালে তাকে অনুসরণ করে অনেক চিত্রশিল্পী নিজেদের চিত্রশিল্প কে সমৃদ্ধ করেছে।
0 Comments