অনলাইন ক্লাস শ্রেণিকক্ষের বিকল্প হতে পারে না।

 

*বিতর্ক*

বিষয় - *অনলাইন ক্লাস শ্রেণিকক্ষের বিকল্প হতে পারে না।*


মতের বিপক্ষে - 



করোনাভাইরাসে  স্বাভাবিক জীবনে ঘটেছে ছন্দপতন, হয়েছে মন্থর - স্থবির। সোশ্যাল ডিসটেন্স, কোরেন্টাইন,লক ডাউন প্রভৃতির ফলে ছাত্র ছাত্রীরা যখন স্কুল ছেড়ে ঘরে আশ্রয় নিয়েছে তখন বাড়িতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু স্কুলে ক্লাসে বসে পড়া ,আর মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে পড়া কি এক‌ই ব্যাপার ? একথা অস্বীকার করা যায় না যে, অনলাইনে পড়াশোনা সম্ভব হচ্ছে না কিন্তু সেখানে ছাত্রছাত্রীরা কতখানি মনোনিবেশ করতে পারছে, তার পরিমাপ কখনোই হয় না। অনেকের মতে অনলাইন ক্লাস দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো । 

      ক্লাস ভর্তি ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষক মহাশয় যখন পড়ান তখন যে পরিমান বোধগম্য হয় ,মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে তা হয় না। ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠ্য বিষয়টি কতটা বুঝতে পারল বা পারল না, তাদের মুখের-চোখের অভিব্যক্তি দেখেই স্যার তা বুঝতে পারেন কিন্তু এক্ষেত্রে শিক্ষকের পক্ষে বিষয়টি বোঝা সম্ভব হয়না । অনলাইন ক্লাস মূলত একমুখী। এখানে শিক্ষক পড়ান কিন্তু সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিতে পারেন না। মোবাইলের স্ক্রিনে যতজন উপস্থিত থাকে, তাদের সবাইকে দেখাও যায় না, তাই ক্লাসে কেউ আছে, না নেই সেটি বোঝার উপায়ও থাকে না।  

    শহরে ইন্টারনেটের সুবিধা ভালো , কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা পাহাড়ি অঞ্চলে ইন্টারনেটের পর্যাপ্ত স্পিড না থাকায় নিরবিচ্ছিন্নঅনলাইন ক্লাসে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে।

অনলাইন ক্লাস অনেক বেশি ব্যয়বহুল।অনলাইন ক্লাস এর জন্য এন্ড্রয়েড মোবাইল বা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ প্রয়োজন। কিন্তু সকলের অনলাইন ক্লাস এর প্রয়োজনীয় ডিভাইস কেনার সামর্থ্য নেই।

কিন্তু গ্রামের দিকে যেখানে ইন্টারনেটে পর্যাপ্ত স্পিডে চলে না বা গ্রামের দরিদ্র মানুষের মোবাইল কেনার সামর্থ্য হয়ে ওঠে না তাদের কাছে অনলাইনে ক্লাস এক অলীক স্বপ্ন মাত্র।

   একা একা বাড়িতে বসে অনলাইন ক্লাস করলে অনেক সময় শিক্ষার্থীর প্রাক্ষোভিক বিকাশ ঠিকমতো হবে না। সহপাঠীদের মধ্যে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনায় যে সমস্যাগুলো সহজেই সমাধান হয়ে যেতে পারে বাড়িতে একা একা সেই সমস্যাগুলো সমাধান তো হয়ই না বরং এই ধরনের মানসিক অবস্থা অবসাদের সৃষ্টি করতে পারে।

  Practical based সাবজেক্ট গুলি অনলাইন ক্লাসে কোনভাবেই পড়ানো সম্ভব নয় বরং বিষয়টি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করার পক্ষে যথেষ্ট।

    তাই অনলাইন ক্লাস কখনোই শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না। শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক মানসিক প্রাক্ষোভিক, নৈতিক বিকাশের স্বয়ংসম্পূর্ণ উপায় হলো শ্রেণিশিখন। 




  

Post a Comment

0 Comments