সমাস

                সমাস


     ছোটবেলায় স্কুলের মাস্টারমশাই বলতেন সমাস শিখতে ৬মাস সময় লাগে কিন্তু বিষয়টি যতটা জটিল করে বলা হয় ততটা জটিল নয়। একেবারে সহজ , সরলভাবে ,উদাহরণ সহযোগে যদি বিষয়টিকে বোঝা হয়, তাহলে এটি খুবই সহজ একটি ব্যাকরণের বিষয় । আমরা আজকের পর্বে সমাসকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছি, যেখানে সমাস সম্পর্কে কোনো ছাত্রছাত্রীর আর কোনো অসুবিধা না থাকে। 

সমাস শব্দের অর্থ হল :-  সংক্ষেপ 

অর্থাৎ  সমাসের কাজ হল সংক্ষিপ্ত করা।

সমাসের সংজ্ঞা :- 

      দুই বা তার অধিক পরস্পর অর্থ সম্বন্ধযুক্ত পদ মিলিত হয়ে, এক পদে পরিণত হওয়াকে সমাস বলে।

উদা:-     মা ও বাবা= মা-বাবা

            অস্ত্র দ্বারা আহত =অস্ত্রাহত


 ✍️সমাস শিখতে গেলে চারটি পরিভাষার প্রয়োজন হয় । পরিভাষা গুলি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে কখনোই সমাজ শিখতে পারা যায় না। ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারলে সমাস আর কোন জটিল বিষয় মনে হবে না।তাই পরিভাষা গুলি নিচে সংজ্ঞা ও উদাহরণ সহকারে উপস্থাপন করা হল:-


১। সমস্ত পদ:-

  সমাসে একাধিক পদ মিলিত হয়ে যে নতুন একটি পদ গঠন করে, সেই পদটিকে 'সমস্ত পদ' বা 'সমাসবদ্ধ' পদ বলে।

উদা:- উপরোক্ত উদাহরণের 'মাবাবা' ও 'অস্ত্রাহত' হল সমস্ত পদ বা সমাসবদ্ধ পদ ।

 * সমস্ত পদটি একটি মাত্র পদ । এটিকে এক মাত্রায় লেখা হয়। পদটি অনেক বড়ো হলে তা হাইফেন দিয়ে তা যুক্ত করা হয়।

 যেমন - "যক্ষ-দানব-মানব " এইভাবে সমস্ত পদ গঠন করা হয় ।


২। সমস্যমান পদ :-

      যে সমস্ত পদের সমন্বয়ে সমাসবদ্ধ পদের সৃষ্টি হয়, তাদের প্রত্যেকটিকে সমস্যমান পদ বলে।

 উদা:- উপরোক্ত উদাহরণের 'মা' একটি সমস্যমান পদ ও 'বাবা' একটি সমস্যমান পদ ।


 ৩। ব্যাসবাক্য :-

        যে বাক্য বা বাক্যাংশ দারাজ সমাসবদ্ধ পদকে বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়, তাকে ব্যাসবাক্য বলে।

 ব্যাস শব্দের অর্থ:- বিস্তার ।

মনে রাখবে ব্যাসবাক্যে সমস্যমান পদ গুলি বিচ্ছিন্নভাবে থাকে কিন্তু সমাসে সেগুলি অবিচ্ছিন্নভাবে থাকে।

উদা :- উপরোক্ত উদাহরণে 'মা ও বাবা' এবং ' অস্ত্র দ্বারা আহত' হল দুটি ব্যাসবাক্য ।


৪। পূর্ব পদ ও পরপদ :-

   সমস্যমান পদের আগের পদটিকে বলে পূর্বপদ এবং পরের পদটিকে বলে পরপদ বা উত্তরপদ।

উদা:-  পীত যে অম্বর =পীতাম্বর

    এখানে 'পীত' হল পূর্বপদ ও 'অম্বর' হল পরপদ ।

* ব্যাসবাক্যে পূর্বপদ ও পরপদ ছাড়াও 'সমস্যমান সহায়ক অন্য পদ'  থাকতে দেখা যায় ।


Post a Comment

1 Comments