কালি তৈরীর পদ্ধতি


প্রশ্ন :-

       আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই- কালি তৈরির পদ্ধতি পাঠ্যাংশ অবলম্বনে লেখ।

উত্তর:-

           'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের বিবর্তন বর্ণনা করতে গিয়ে কালি কলম প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগা বাঁশের কঞ্চির কলমে যে কালি দিয়ে ছোটবেলায় লেখকরা লিখতেন সেই কালি তৈরি করা হতো বাড়িতেই। অবশ্য এ বিষয়ে পরিবারের মা, পিসি, দিদিরা তাদের সাহায্য করতেন। উৎকৃষ্ট কালি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাচীনেরা বলতেন-

           "তিল ত্রিফলা শিমুল ছালা

            ছাগদুগ্ধে করি মেলা,

            লৌহ পাত্রে লোহায় ঘষি

            ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।"

অর্থাৎ- তিল , ত্রিফলা (আমলকি, হরিতকী, বহেড়া), শিমুল ছাল , ছাগলের দুধ একত্রে মিশিয়ে লোহার পাত্রে লোহায় ঘষে যে উৎকৃষ্টমানের কালি তৈরি করা হয় কাগজ ছিঁড়ে গেল‌ও সেই কালি শেষ পর্যন্ত অক্ষত থাকে। কিন্তু এত সব উপকরণ জোগাড় করা লেখকদের পক্ষে খুবই কষ্টকর ছিল। তাই তাঁরা কালি তৈরি করতেন একটু অন্যভাবে, অপেক্ষাকৃত সহজ পদ্ধতিতে। কাঠের উনুনে ব্যবহার করা কড়াইয়ের তলার কালি লাউ পাতা দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে পাথরের বাটিতে জল দিয়ে গুলে তাতে হরীতকি ঘষার পর আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে গুঁড়ো করে ভালো করে মিশিয়ে খুন্তির গোড়া গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে তৈরি করা হতো কালি। পরে সেই কালি ন্যাকড়ায় ছেঁকে দোয়াতে ভরে রাখা হতো।


                                NRIPEN MAHATO
                                       M.A,B.ED
                          BURDWAN UNIVERSITY

       

Post a Comment

0 Comments